জাতীয়সারাদেশ

গণহত্যা দিবসে রোহিঙ্গারা স্বদেশে ফেরার আকুতি

টাইমস ২৪ ডটনেট, ঢাকা: গণহত্যা দিবসে রোহিঙ্গারা স্বদেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছে।মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা নিধনের শুক্রবার ৬ বছর । এই দিনটিকে রোহিঙ্গারা কালো দিবস আখ্যা দিয়ে রোহিঙ্গা গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করে আসছেন। এ উপলক্ষ্যে শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে বাংলাদেশে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘হোপ ইজ হোম’ ক্যাম্পেইন পালন করেছেন রোহিঙ্গারা। জানা গেছে, ‘হোপ ইজ হোম’ ক্যাম্পেইন উপলক্ষ্যে আশপাশের ক্যাম্প থেকে লোকজন খেলার মাঠে ক্যাম্পেইন সমাবেশে পুরুষদের পাশাপাশি রোহিঙ্গা নারী ও শিশুরাও যোগ দেন। এ সময় পোস্টার, প্ল্যাকার্ডে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার দাবি তুলেন। রোহিঙ্গা ঢলের ৬ বছরে রোহিঙ্গা গণহত্যা দিবসের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার শোয়াইব, মাস্টার নুরুল আমিন, মাস্টার জুবায়ের, মোহাম্মদ ইউসুফ ও মাস্টার কামাল প্রমুখ।
রোহিঙ্গা গণহত্যার ৬ বছর পূর্তির উপলক্ষ্যে কক্সবাজারের রোহিঙ্গারা দিবসটি পালন করেন। তারা সেখানে মিয়ানমারে গণহত্যার বিচার, দ্রুত প্রত্যাবাসনসহ কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন।দাবিগুলো হলো- মিয়ানমারে পার্লামেন্টে রোহিঙ্গা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান, সীমিত সময় রাখা যাবে মিয়ানমার ট্রানজিট ক্যাম্পে, সকল রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসন করা, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, নিজস্ব সহায়-সম্বল ফেরত, প্রত্যাবাসনের সময় বেঁধে দেওয়া, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন, একসঙ্গে গ্রামের সব মানুষকে প্রত্যাবাসন করা ও রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী হিসেবে উত্থাপন না করা। এছাড়া প্রত্যাবাসনে প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ, ওআইসি, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন ও বাংলাদেশসহ দাতা সংস্থাকে অন্তর্ভুক্ত করা।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট দেশটির সেনাবাহিনী রাখাইন অঞ্চলের মংডু, বুচিদং ও রাসেথং জেলার রোহিঙ্গাদের ওপর নির্বিচারে হত্যা ও নির্যাতন শুরু করে। সে সময় প্রাণে বাঁচতে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঢল নামে। তখন সীমান্ত অতিক্রম করে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে এসে আশ্রয় নেয়। ওই দিনটিকে স্মরণে কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা রোহিঙ্গা জেনোসাইড রিমেম্বার ডে পালন করে আসছে।
সমাবেশে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যানিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, আমরা আমাদের দেশে ফিরে যেতে চাই। আমরা এই গণহত্যা দিবসে পালন করছি কারণ এদিনে মিয়ানমার জান্তা সরকার আমাদের ওপর জাতিগত গণহত্যা চালিয়েছে। এই দেশে আর কত বছর থাকবো। আর থাকতে চাই না। আমরা স্বদেশে ফিরতে চাই।
সাধারণ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ব্যানারে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে রোহিঙ্গা অধিকারকর্মী সৈয়দউল্লাহ বলেন, মিয়ানমার আমাদের দেশ, অনতিবিলম্বে আমাদের নিজ দেশে ফেরত নিতে হবে। বাংলাদেশের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞতা জানাই, আন্তর্জাতিক কমিউনিটিকে প্রত্যাবাসন সফল করতে দেশটির পাশে থাকতে হবে।
৮ আর্মড পুলিশের অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আমির জাফর (বিপিএম) বলেন, শুক্রবার রোহিঙ্গাদের গণহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে তারা একটি সমাবেশ করেছে। তাদের এই সমাবেশ ঘিরে পর্যাপ্ত পরিমাণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।

Related Articles

Back to top button